পার্থেনিয়াম (Parthenium hysterophorus) একটি অতি ক্ষতিকর আগাছা গাছ, যা সাধারণত "ফুলমূলা", "চাপাটি ঝাড়", কিংবা "কংগ্রেস ঘাস" নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং পরিবেশ, কৃষি ও মানুষের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
এটি ফসলের জমিতে জন্ম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে।
মাটির পুষ্টি শুষে নেয়, ফলে ফসল দুর্বল হয়।
এটি অন্যান্য উদ্ভিদের অঙ্কুরোদগম ও বৃদ্ধি বাধা দেয় (allelopathic effect)।
এই গাছের রেণু বা ধুলিকণা শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রবেশ করলে অ্যালার্জি, হাঁপানি, চর্মরোগ (eczema), চোখ চুলকানো, এবং নাক থেকে পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
দীর্ঘ সময় সংস্পর্শে থাকলে ডার্মাটাইটিস (চামড়ায় ফুসকুড়ি) হতে পারে।
গবাদি পশু এই গাছ খেলে বিষক্রিয়া, দুধে দুর্গন্ধ এবং দুধ উৎপাদন কমে যাওয়া ঘটতে পারে।
অনেক ক্ষেত্রে এটি পশুদের জন্য বিষাক্ত।
এটি দ্রুত বংশ বিস্তার করে এবং অন্যান্য স্থানীয় গাছপালাকে বিলুপ্তির পথে ঠেলে দেয়।
গাছটি মূলসহ তুলে ফেলা এবং পুড়িয়ে ফেলা উচিত। তবে এতে সুরক্ষা গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
বর্ষার আগে তুলে ফেললে বীজ ছড়ানোর ঝুঁকি কমে।
Zygogramma bicolorata নামে একটি পোকা ব্যবহার করে এই গাছ দমন করা যায়। এটি পার্থেনিয়াম পাতায় ডিম দেয় এবং পাতা খেয়ে গাছ ধ্বংস করে।
তবে এই পদ্ধতির জন্য স্থানীয় কৃষি অফিস বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গ্লাইফোসেট (Glyphosate) বা ২,৪-ডি (2,4-D) জাতীয় আগাছানাশক স্প্রে করা যেতে পারে।
অবশ্যই প্রশিক্ষিত ব্যক্তির মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে, যাতে পরিবেশ বা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
গাছ জন্মানোর স্থান ঢেকে রাখলে রোদ না পেয়ে গাছ মরতে পারে।
প্লাস্টিক বা জৈব পদার্থ দিয়ে ঢেকে রাখাও কার্যকর হতে পারে।
পার্থেনিয়ামের ক্ষতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো।
স্কুল-কলেজে সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করা।
স্থানীয় পর্যায়ে নিধন অভিযান চালানো।
এই গাছ নিজে থেকে কখনও উঠিয়ে ফেলবেন না যদি আপনি অ্যালার্জি বা চর্মরোগে ভোগেন। গ্লাভস ও মাস্ক পরিধান করুন।
এক জায়গা থেকে তুললেও পুরো এলাকা থেকে না তুললে এটি আবার দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস