Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়, ঝিনাইদহ সদর, ঝিনাইদহ এর তথ্য বাতায়নে আপনাকে স্বাগতম।


ঘটনাপুঞ্জ


এক কৃষকের সফলতার গল্প:

মোঃ আকিদুল ইসলাম একজন দরিদ্র কৃষক বাবা মায়ের ছেলে। ছোট থেকেই কৃষি কাজই তার পেশা। লেখাপড়া প্রাইমারির গন্ডি পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে আর যাওয়া হয়নি। বাবার সাথে কৃষি কাজই সম্বল করে নিয়েছে। ছোট বেলা থেকেই কৃষির প্রতি তার আগ্রহ ছিল বেশি। নতুন নতুন জাতের আবাদ ও ফলন বেশি পাওয়ার আগ্রহের জন্য উপসহকারী কৃষি অফিসার জনাব সমর কুমার মিত্রের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। নিজের সামান্য জমি, বর্গা ও লিজ নিয়ে চাষ করে কোন রকম সংসার চালান তিনি। বিক্ষিপ্তভাবে 50 শতাংশ জমিতে নাবী পাটবীজ উৎপাদন করে তিনি খরচ বাদে 20,000/- (বিশ হাজার টাকা) লাভ করেন। এতে তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। পরের বছর তিনি কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা ফসল উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের পেঁয়াজ, রসুন ও মসুর প্রদর্শনী আবাদ করেন। প্রদর্শনীসহ গত 2018-2019 অর্থবছরে তিনি 2 একর পেঁয়াজ, 2 একর রসুন, 3 একর মসুর, 1 একর তিল ও 1 একর মুগ আবাদ করেন। এ বছর খরচ বাদে তিনি 7,50,000/- (সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) লাভ করেন। 2021-22 অর্থবছরে একই রকমের চাষাবাদ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরে কর্মকর্তাগণ যেমন পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক, উপপরিচালক মহোদয়গণসহ অত্র দপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এবং স্থানীয় কৃষকরা তার ফসল ও নতুন জাতের আবাদ ধরণ দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেন ও মুগ্ধ হন। উপজেলা কৃষি অফিস, ঝিনাইদহ সদর এর এসএমই গঠনের মাধ্যমে তাকে বীজ ডিলার হিসাবে নির্বাচিত করে ও 2019-20 অর্থবছর এবং 2020-21 অর্থবছরে এসএমই এর বীজ ডিলার হিসাবে জেলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কারটিও তিনিই জিতে নেন। তিন বিঘা জমি নিয়ে চাষাবাদ শুরু করে এখন মাঠে তার লীজ , বর্গা ও নিজের জমি দিয়ে 10 বিঘা জমি আবাদ রয়েছে। বাড়িতে কাঁচা ঘরের স্থানে পাকা ঘর দিয়েছেন। মাঠে জমি কিনেছেন। মাত্র তিন বছরে তার আর্থ সামাজিক অবস্থার মোড় ঘুরে গেছে। এখন সে একজন সফল চাষী ও একজন বীজ ডিলার। তার নিকট থেকে এলাকার চাষীরা পাট, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, মসুর, মুগ, তিল ও মাসকলাই বীজ ক্রয় করে আবাদ করে বেশি বেশি ফলন পাচ্ছেন। এলাকায় তার অনেক সুনাম ছড়িয়েছে। তিনি একজন সফল চাষী। আগামীতে তিনি জৈব সার উৎপাদন (ভার্মিকম্পোস্ট) তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন ও কীটনাশক বাদে ফসল উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছেন। এছাড়াও নিরাপদ ফসল ও বিষমুক্ত সবজি আবাদের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করি।


এক কৃষকের সফলতার গল্প:
কৃষক মোঃ বাকি বিল্লাহ পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান। বাবা মৃত্যুবরণ করার পর সংসারে সকল দায়-দায়িত্ব তার উপর এসে পড়ে। শত কষ্টের মাঝেও তিনি এইচ.এ.সি পাশ করেন। ছোট বেলা থেকেই কৃষির প্রতি তার আগ্রহ ছিল বেশি। নতুন নতুন জাতের আবাদ ও ফলন বেশি পাওয়ার আগ্রহের জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ শাহানারা খাতুন এর সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে থাকেন। সেই সূত্র ধরেই লতি কচুর উপর তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়ে থাকে। 2021-22 অর্থবছরে উপজেলা কষি অফিস, ঝিনাইদহ সদর, থেকে লতি কচুর প্রশিক্ষণ পেয়ে 20 শতক জমিতে প্রদর্শনী স্থাপন করেন। প্রদর্শনী স্থাপনের ব্যয় হয় 15,000/- (পনেরো হাজার টাকা) এবং লতি ও চারা বিক্রয় করে আয় করেন 95,000/- (পচানব্বই হাজার টাকা) । লতি কচুর প্রদর্শনী থেকে বেশ ভাল লাভবান হওয়ার পরে সে নিজ উদ্যোগে 50 শতক জমিতে লতিকচু রোপন করেন। উক্ত 50 শতক জমির লতি কচু ও চারা বিক্রয় করে সে 2,20,000/- (দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা) আয় করে এবং তার লতি কচু রোপনের ব্যয় ছিল 50,000/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা) । এই লতি কচু চাষ করে লাভের টাকা দিয়ে তিনি তার সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন ও একটি পাওয়ার টিলারসহ গাভী এবং জমিও ক্রয় করেন। তিনি শুধু এখানেই থেমে নেই; বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজিও চাষ করেন। যেমন: বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালংশাক, মুলা, সবুজ শাক ইত্যাদি। এছাড়া তিনি কন্দাল প্রকল্পের গাছ আলু ও ওলকচু রোপনের ইচ্ছাও পোষণ করেন। এলাকায় তার অনেক সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। আগামীতে তিনি জৈব সার (ভার্মিকম্পোস্ট) উৎপাদন এবং নিরাপদ ফসল ও উচ্চ মূল্যের ফসল আবাদের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস, ঝিনাইদহ সদর তার উত্তরোত্তর সাফল্য ও মঙ্গল কারনা করছে।



এক কৃষকের সফলতার গল্প:

ঝিনাইদহ সদর উপজেলাধীন 4 নং হলিধানী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের একজন নামকরা ফল চাষী মোঃ আবুল কালাম আজাদ, পিতাঃ মোঃ গোলাম মস্তফা। 6 ভাই বোনের মধ্যে সে চতুর্থ। 1993 সালে এস.এস.সি পাশ করেন। 1994 সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং 2013 সালে অবসর গ্রহণ করেন। তখন তার পরিবারে ছিল অভাব অনটন। ঘর ছিল টিনের। এসময় তাদের জমির পরিমাণ ছিল 1 একর মাত্র।

2020 সালে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ও পার্শ্ববর্তী কৃষকের চাষ দেখে ফল বাগান করতে আগ্রহী হন। তাই 1 একর জমিতে মিশ্র ফলবাগান গড়ে তোলেন এবং প্রায় 400 টি কুল ও মাল্টা/কমলার 318 টি চারা রোপন করেন। উক্ত ফল বিক্রি করে তিনি প্রায় 2,55,000/- টাকা পেয়েছিলেন এবং খরচ বাদে লাভ ছিল প্রায় 1,35,000/- টাকা। মিশ্র ফল চাষের পাশাপাশি তিনি সবজি চাষ করতেন। কিন্তু অন্যান্য ফসলের তুলনায় মিশ্র ফল চাষে লাভ বেশি হওয়ায় তিনি প্রতি বছরে মিশ্র ফল চাষের ফল  বাগান বৃদ্ধি করতে থাকেন এবং লাভের টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করতে থাকেন। 2021 সালে কৃষি বিভাগ তাকে মিশ্র ফল বাগানের উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এ ছাড়া কৃষি বিভাগের কাছ থেকে তিনি আধুনিক ও বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে জৈব পদ্ধতিতে মিশ্র ফলের চাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি নিজস্ব 3 একর 20 শতকের উপর “তিন ভাই এগ্রো ফার্ম” নামে একটি মিশ্র ফলবাগান স্থাপন করেছেন। সর্বোপরি মিশ্র ফলবাগান করে তিনি একজন সফল কৃষক। তার সাফল্যের কথা গোটা এলাকায় সুপরিচিত। এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক তার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মিশ্র ফলবাগানে আগ্রহ প্রকাশ করছে। কৃষি বিভাগ তাদের এই আগ্রহ দেখে সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা ও সঠিক পরামর্শের মাধ্যমে মিশ্র ফলবাগান করার যাবতীয় সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।


এক কৃষকের সফলতার গল্প:

মোঃ সোহেল রানা ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার পৌরসভা ব্লকের পবহাটি গ্রামের মোঃ আব্দুল খালেক ও আলেয়া বেগমের দুই পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের মধ্যে 1ম পুত্র সন্তান। তিনি 10/06/1990 খ্রি. জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সেই বাবার সাথে কৃষি কাজের হাতেখড়ি হয়। তিনি 2008 খ্রি. এস.এ.সি পাশ করেন এবং 2013 খ্রি. এইচ.এস.সি ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএসএস কোর্স 2016 খ্রি. ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অধীন এম.বি.এস কোর্স 2018 সালে পাশ করেন। তার পিতার 08 শতক বসত ভিটা ছাড়া কোন কৃষি জমি ছিলনা। কিন্ত তিনি 100 শতক জমি 2012 খ্রি. এর দিকে অন্যের কাছ হতে পাত্তন নিয়ে পেঁপে চাষ শুরু করেন। পবহাটি সিটি মোড়ে একটা ছোট মুদি আছে তা দিয়ে তিনি জীবিকা বির্বাহ করেন। কিন্ত পরিবারের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তার বোনদের বিবাহ দিতে টাকার প্রয়োজন হয়। তাই তিনি 2015 খ্রি. এর দিকে কৃষি ব্যাংক হতে লোন নিয়ে 100 শতক জমি পত্তন নিয়ে ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার এর কাছ থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ করে তিনি সফল হন এবং পরবর্তীতে অল্প অল্প করে চাষ বাড়াতে থাকেন। তিনি প্রতি বছর তার উৎপাদিত পেঁপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কাঁচা বাজারে বিক্রি করেন। বর্তমানে তার পেঁপে আবাদকৃত জমি 750 শতক। তিনি প্রতি বছর প্রায় 7-8 লক্ষ টাকার পেঁপে বিক্রি করেন। তিনি আয়কৃত টাকা হতে একটা পাকা বাড়ী বানাতে এবং বোনদের বিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

সর্বোপরি তিনি কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় ও প্রচেষ্টায় নিজেকে একজন সফল কৃষক হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছেন। তিনি একজন সফল কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস, ঝিনাইদহ সদর  তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করে।